এক অন্ধ লোক আসলো এক হোটেলে খাবার খেতে।
অন্ধ লোকটার ঘ্রাণশক্তির কারিশমা দেখে মালিক অবাক হল ভীষণ। তাকে খাবারদাবার রেডি করে দিয়ে হোটেলের মালিক গেল রসুইঘরের দিকে। সেখানকার প্রধান রাঁধুনী তার স্ত্রী আলেয়া। আলেয়াকে পুরো কাহিনীটা সবিস্তারে খুলে বললো সে। ওদিকে লোকটা খানাদানা শেষ করে বিল মিটিয়ে বিদায় হল।
ওয়েটার, যে কিনা হোটেলটার মালিকও, এসে অন্ধ লোকটাকে মেন্যুটা বাড়িয়ে দিল।
“দুঃখিত জনাব।”, বললো অন্ধ লোকটা। “আমি চোখে দেখতে পাইনা। তাই আপনার মেন্যুতে কি আছে সেটা আমার পক্ষে দেখা সম্ভব না।”
“দুঃখিত জনাব।”, বললো অন্ধ লোকটা। “আমি চোখে দেখতে পাইনা। তাই আপনার মেন্যুতে কি আছে সেটা আমার পক্ষে দেখা সম্ভব না।”
“ওহহো, আমি দুঃখিত।”, বললো মালিক। “তো আপনার অর্ডার আমি কিভাবে নেব।”
“আপনি এক কাজ করুন”, অন্য কোন কাস্টমারের ব্যবহৃত একটা চামচ নিয়ে আসুন। আমি সেটার গন্ধ শুঁকে বলে দিতে পারবো খাবারটা কী। তারপর আপনাকে জানাব, সেটা আমি খাব কিনা।”
হোটেলের মালিক এমন নতুন ধরণের কৌশলে একটু অবাক হল। সে গিয়ে পূর্বতন কাস্টমারের ব্যবহৃত একটা তেল চিটচিটে কাঁটাচামচ এনে লোকটাকে দিল। অন্ধ লোকটা সেটা নাকের কাছে নিয়ে কুকুরের মত কিছুক্ষণ শুঁকে বললো, “আহ, মনে হচ্ছে গরুর সিনার গোশত দিয়ে মাসকলাইর ডাল। আমার খুব পেয়ারের খানা। নিয়ে আসেন, এটাই চলবে।”
অন্ধ লোকটার ঘ্রাণশক্তির কারিশমা দেখে মালিক অবাক হল ভীষণ। তাকে খাবারদাবার রেডি করে দিয়ে হোটেলের মালিক গেল রসুইঘরের দিকে। সেখানকার প্রধান রাঁধুনী তার স্ত্রী আলেয়া। আলেয়াকে পুরো কাহিনীটা সবিস্তারে খুলে বললো সে। ওদিকে লোকটা খানাদানা শেষ করে বিল মিটিয়ে বিদায় হল।
কয়েক হপ্তা পর সেই হোটেলে আবার এল লোকটা। ওয়েটার-কাম-মালিক তাকে মেন্যুটা আবার বাড়িয়ে দিল। অন্ধলোকটা বললো, “দেখুন, আপনি হয়তো ভুলে গেছেন আমার কথা। আমি কিছুদিন আগেও এ হোটেলে এসেছি। আমি আসলে চোখে দেখতে পাইনা। মেন্যু দিয়ে তাই কোন লাভ নেই।”
“ওহহো” বললো মালিক। “আপনাকে প্রথমে চিনতে না পারার জন্য দুঃখিত। তো, আমি কি এখন একটা ব্যবহৃত চামচ নিয়ে আসবো?”
“নিয়ে আসুন”, অন্ধ লোকটা বললো।
মালিক গেল আবার ধৌতঘরে। সেখান থেকে বেজায় হলদেটে একটা চামচ নিয়ে অন্ধলোকটাকে দিল। অন্ধ লোকটা প্রথমে একেবারে বন্য শৃগালের মত সেটা শুঁকে দেখলো। তারপর উৎফুল্ল কণ্ঠে বললো, “আরে এযে দেখি কচুর লতি দিয়ে পাঠার পাছার মাংস। আমার খুব- খুউব ফেভারিট। তাড়াতাড়ি নিয়ে আসেন দেখি, চেটেপুটে খাই।”
এবারও মালিক চমৎকৃত হলো। তবে তার মনে খটকা লাগলো যে লোকটা বোধয় ফাও ভাব নেয়ার জন্য এমনটা করছে, আসলে সে অন্ধ না। সে ব্যাপারটা তার বউ আলেয়াকে বললো, এবং তাকে জানিয়ে রাখলো যে পরেরবার কানাটা এলে তাকে ভালোমত যাচাই করে দেখবে।
সপ্তাহকাল পরেই অন্ধলোকটা আবার সেই হোটেলে এলো খেতে। আসার পথেই হোটেলের মালিক তাকে দূর থেকে দেখলো, তাই সে একটা চামচ নিয়ে ভোঁ দৌড়ে গেল তার বউয়ের কাছে। গিয়ে আলেয়ার কানে কানে তার কষে রাখা কুপরিকল্পনাটা উগরে দিল।
আলেয়া প্রথমে একটু গাঁইগুঁই করলেও স্বামীর একান্ত অনুরোধের মুখে ঠিকই শেষপর্যন্ত ঢেঁকিটা গিলতে বাধ্য হল। সে তার স্বামীর কাছ থেকে চামচটা নিল। অন্যহাতে তার সেলোয়ারের বাঁধনটা টেনে খুললো…।
অন্ধলোকটা সিটে এসে বসলো। তৎক্ষণাৎ হোটেলের মালিক সেই বিশেষ চামচটা নিয়ে লোকটার সামনে হাজির হয়ে বললো, “শুভসন্ধ্যা জনাব! আমি আপনার জন্য ইতোমধ্যেই একটা চামচ রেডি করে রেখেছি।”
“হে হে, চামচটা তাহলে তাড়াতাড়ি দিন।”, বললো অন্ধলোকটা।
চামচটা হাতে পাওয়া মাত্রই অন্ধলোকটা সেটাকে বুনো নেকড়ের মতো শুঁকতে থাকলো। নাসাছিদ্রকে এগিয়ে নিয়ে ভালোমত চামচের আগার উপর বিচরণ করলো সে। হোটেল মালিককে অবাক করে দিয়ে লোকটা চামচের আগায় তার জিহ্বার ডগাও ছোঁয়ালো বারদুয়েক। পুঙ্খানুপুঙ্খ নিরীক্ষণ শেষে হঠাৎ অন্ধ লোকটা বলে উঠলো, “তার্মায়রেবাপ!! আলেয়া যে এইখানে কাজ করে সেটাতো আগে জানতাম না!!”
No comments:
Post a Comment